গাজাবাসীর জন্য বহুল প্রতীক্ষিত দিন ১৯ জানুয়ারি। স্থানীয় সময় রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যুদ্ধবিধ্বস্থ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের। গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরা চলা এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র,মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত কার্যকর হচ্ছে।রবিবার ভোরে আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার রাফাহ অঞ্চল থেকে মিশর ও গাজার সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডোরের দিকে তাদের সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে নিজেদের কব্জায় থাকা ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। রবিবার বিকেলে ছাড়া পাবে ৩ ইসরায়েলি জিম্মি।
এর বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ৭৩৭ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে প্রথম দফায় রবিবার ছাড়া পাবেন ৯৫ জন ফিলিস্তিনি। তিনটি ধাপে অন্তর্ভুক্ত যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপটি ছয় সপ্তাহের তথা ৪২ দিনের একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই সময়কালে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়া হবে। যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ রয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ৭৩৭ জন ফিলিস্তিনিকে বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিচার মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় শনিবার হিব্রæ ভাষায় ৭৩৭ ফিলিস্তিনি বন্দির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রথম ধাপে এসব ফিলিস্তিনি বন্দিরা মুক্তি পাবেন।
এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ৮ ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকের পর শনিবার সকালে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে।এতে আরো বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সরকার একটি যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে রবিবার থেকে চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পথ প্রস্তুত হয়েছে। ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রোববার দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হবে। এদের মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ৯৫ জনের নামও প্রকাশ করেছে বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষযয় আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেখানে অবশিষ্ট সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি,স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মৃতদেহগুলোর ফেরত দেয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্বাবধানে পরিচালিত হবে। যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর ১৫ জানুয়ারি গাজায় দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হয় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
আপনার মতামত লিখুন :