দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৮১ আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্থ, নিহত বেড়ে ৬২

দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়েতে যাত্রীবাহী একটি বিমান বিধ্বস্থ হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬২ জনে পৌঁছেছে। আশংকা করা হচ্ছে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।  স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে একটি যাত্রীবাহী বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের দেয়ালে আঘাত হানলে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। বার্তা সংস্থা বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ১৭৫ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু নিয়ে জেজু এয়ার নামের একটি বিমান পরিবহন সংস্থার এই দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭ সি-২২১৬ স্থানীয় সময় আজ রোববার(২৯ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৭ মিনিটে মুয়ান বিমানবন্দরে অবতরণের সময় এই দুর্ঘটনার শিকার হয়। উদ্ধারকারীরা বিমানের লেজের অংশে আটকে থাকা যাত্রীদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন। ২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন,রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ার পর বিমানটি দেয়ালে আঘাত করলে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ না করায় এটি রানওয়ে বরাবর অনেক দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে যায় করে এবং দেয়ালে আঘাতের ফলে বিমানটি আগুন ধরে যায় এবং এর ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দিকে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং বিষয়ক ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার-২৪ জানিয়েছে, বিমানটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের। বোয়িং কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। এদিকে, বিমানটির মালিক সংস্থা জেজু এয়ারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
এদিকে,এই দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সুং-মোক জরুরি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে ধোঁয়া ও আগুন বের হতে দেখা গেছে। ফায়ার ব্রিগেড ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে। এই দুর্ঘটনার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। তবে তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ না করার কারণে এটি ঘটেছে। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানের পূর্বে এ ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেছে কিনা, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য,দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটল। শুক্রবার২৭ডিসেম্বর নতুন ভারপ্রাপ্ত পেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা চোই সুং-মোক এই প্রথম এমন একটি জাতীয় সংকট মোকাবিলা করছেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকাজ শেষ হলে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে তাদের পরিবারের কাছে খবর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। মর্মান্তিক বিমান দুঘর্টনার খবরে গোটা দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে।