রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

‘পরীমনির সঙ্গে থাকা ব্যক্তি হাফপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরে ক্লাবে এসেছিল’

প্রকাশিত: ০৮:১২ এএম, জুন ১৭, ২০২১

‘পরীমনির সঙ্গে থাকা ব্যক্তি হাফপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরে ক্লাবে এসেছিল’

গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে। ৭ জুন পরীমনি ও তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ওই ক্লাবে গিয়ে গ্লাস ভাংচুর করেছেন বলে অভিযোগ কর্তৃপক্ষের। তারা বলছে, পরীমনির সঙ্গে আসা ব্যক্তিটি হাফপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরে ক্লাবে এসেছেন। এতে বাধা দেওয়ায় উত্তেজিত হয়ে ভাংচুর করেছেন পরীমনি ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন। তবে এ গণমাধ্যমে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরীমনি। বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর ইকবাল। তিনি বলেন, পরীমনি সেই রাতে ১৫টি গ্লাস, নয়টি স্ট্রে এবং অনেকগুলো হাফপ্লেট ছুড়ে মেরে ভেঙেছেন। ঘটনার দিন পরীমনির সঙ্গে এক ভদ্রলোক ছিল হাফপ্যান্ট পরা, আরেকজন নারীও ছিল। এটা রাত প্রায় সোয়া ১টা বা দেড়টার ঘটনা। এ বিষয়ে পুলিশের গুলশান বিভাগে উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী যুগন্তরকে বলেন, ৭ জুন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে ফোন পেয়ে পুলিশ অল কমিউিনিটি ক্লাবে গিয়েছিল। পুলিশ সেখানে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে পুলিশ থানায় এসে নিয়ম অনুযায়ী ঘটনার বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। কে এম আলমগীর ইকবাল বলেন, ক্লাবের কিছু নিয়ম-কানুন আছে। কোনো মেইল যদি ক্লাবে আসে তাকে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। কিন্তু পরীমনির সঙ্গে আসা ভদ্রলোক হাফপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরে এসেছেন। তখন ক্লাব থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন আমাদের ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ডিরেক্টর ও ক্লাবের এক ম্যানেজার। ওনারা সেটা দেখে বলেছেন, আপনিতো ক্লাব রুলস ভায়োলেট করেছেন। আপনিতো হাফপ্যান্ট পরে এখানে আসতে পারেন না। তখন তারা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তাদের আচার-আচরণ গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় ওনারা (ডিরেক্টর ও ম্যানেজার) বলেছেন, রাত অনেক হয়ে গেছে আপনারা চলে যান। কিন্তু তারা চলে যাচ্ছিল না বিধায় আমাদের দুই পরিচালকই ক্লাব থেকে চলে যান। পরবর্তীতে ঘটনার বর্ণনায় ক্লাব প্রেসিডেন্ট বলেন, তারপর যেই সদস্যের মাধ্যমে ওনারা এসেছিলেন উনিও তাদেরকে চলে যাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেন। কিন্তু ওনারা যাচ্ছিলেন না বিধায় ওই সদস্যও চলে যান। এরপর ওনারা (পরীমনি ও সঙ্গীরা) হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে চেচামেচি শুরু করেন এবং গ্লাস ও স্ট্রে ছুড়ে মারতে থাকেন। তখন আর কেউ ছিল না ক্লাবে। দু’জন ওয়েটার আর এই তিন চারজন মানুষ ছিল। একপর্যায়ে তারা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশ কল করেন। পুলিশ আসার পর তারা দেখতে পান, এগুলো উনি ছুড়ে মারছেন। তখন পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞেস করে আপনারা কেন এসেছেন, কেন আমাদের কল করেছেন? তখন তারা বলেন, আমাদের হেনস্থা করা হয়েছে। তখন পুলিশ ভাইয়েরা বলেন, কিছুতো দেখছি না। তারপর পুলিশ ওয়াকিটকির মাধ্যমে ওপরে (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা) জানতে চায় আমরা কি করব। তখন ওপর থেকে নির্দেশ আসে ওনারা এমন করলে তাদের বের করে দিয়ে আপনারা চলে যান। ওয়াকিটকির সেই আওয়াজ সবাই শুনতে পাচ্ছিলেন। এরপর তারা কিছুটা ঠাণ্ডা হন ও পুলিশের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। এরপর আর কিছু ঘটেনি। তিনি বলেন, আমরা ওনাদের কাউকে চিনতামও না জানতামও না। পরে আমরা শুনেছি ওনাদেরর একজনের নাম পরীমনি। ক্লাব প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর ইকবাল বলেন, ক্লাব কর্তৃপক্ষ যেই সদস্যের মাধ্যমে এসেছিল তাকে শোকজ করেছে। তার বিরুদ্ধে ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটা চলমান অবস্থায় আছে। তিনি বলেন, যে সদস্য ক্লাবের নিয়মের ব্যতয় করে তাকে আমাদের নিয়ম অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করি। তাকে শোকজ, শোকজ গৃহীত না হলে তিন মাস, ছয় মাস এমনকি সদস্যপদ স্থগিতও করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে পরীমনিকে কল করা হলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে গণমাধ্যমে তিনি এটিকে ‘ফালতু অভিযোগ’ বলে অভিহিত করেছেন। প্রসঙ্গত, ৯ জুন মধ্যরাতে পরীমনি ঢাকা বোট ক্লাবে গেলে সেখানে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন। এই ঘটনায় গত সোমবার ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন এই চিত্রনায়িকা। মামলার পর পুলিশ নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। পরীমনির মামলায় নাসির ও অমি ৭ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। অপরদিকে মাদক মামলায় তাদের সঙ্গে তিন নারীকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
Link copied!