শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মীয়দের নিয়োগে বেপরোয়া ভিসিরা

প্রকাশিত: ০২:২২ এএম, এপ্রিল ৩, ২০২১

আত্মীয়দের নিয়োগে বেপরোয়া ভিসিরা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে আত্মীয়দের নিয়োগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বেশ কয়েকজন উপাচার্য (ভিসি)। তাঁরা তাঁদের পুত্র, কন্যা বা আত্মীয়-স্বজনকে নিয়োগ দিতে কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না। ইচ্ছামতো নিয়োগ বিধিমালায় সংশোধন আনছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল ও অভিজ্ঞতায় পরিবর্তন আনছেন। আবার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া শেষে বিধিমালা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ভিসিদের এসব অনিয়ম প্রমাণ হওয়ার পরও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে অনুসরণীয়। আর সেখানে যাঁরা ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান, তাঁরা সম্মাননীয় ও আদর্শ ব্যক্তি। কিন্তু তাঁদের অনেকেই ক্ষমতা পেয়ে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে একাধিক ভিসির ব্যাপারে অনিয়ম প্রমাণের পর সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলেও তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ফাইলবন্দি হয়েই পড়ে আছে। দেশের ৪৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬টির শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্যে সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে ১০ জন উপাচার্যের বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত চলছে। সম্প্রতি তিনজন ভিসির ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এসব ভিসির বেশির ভাগের বিরুদ্ধেই সাময়িক সময়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে কম যোগ্যতাসম্পন্ন পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়োগের পর আবার আগের জায়গায় বিধিমালা ফিরিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘বেশ কয়েকজন ভিসি নিয়োগে অনিয়ম করেছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। দেখা যায়, ভিসিরা তাঁর পছন্দের শিক্ষকদের দিয়ে নিয়োগ কমিটি করেন। এ ছাড়া একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটেও তিনিই প্রধান। ফলে তিনি ইচ্ছা করলে যেকোনো কিছুতে পরিবর্তন আনতে পারেন। ফলে আমরা তদন্ত করলেও নিয়মের ব্যত্যয় পাই না। আমার মনে হয়, ভিসিদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।’ বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) : এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ মান্নান তাঁর ছেলেকে শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে একাধিক যোগ্যতা শিথিল করেছেন। ভিসির ছেলে জাহেদ মান্নান ২০১৬ সালের শেষ দিকে বাউবিতে সহকারী অধ্যাপক পদে আবেদন করলে নির্ধারিত যোগ্যতা না থাকায় আবেদন বাতিল হয়। কিন্তু এক বছর পার হওয়া মাত্রই ২০১৮ সালে তাঁর ওই ছেলেই সহযোগী অধ্যাপক পদ বাগিয়ে নেন। সূত্র জানায়, উপাচার্যের ছেলে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাদ পড়ার পর ২০১৭ সালে নিয়োগবিধি সংশোধন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের ছেলেকে নিয়োগ দিতে সিজিপিএ ৩.২০ থেকে কমিয়ে ২.৫০ করা হয়। সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে তাঁকে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তিতে উচ্চতর ডিগ্রি থাকা অতিরিক্ত যোগ্যতা বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি উপাচার্যের ছেলের পার্টটাইম শিক্ষকতাকে চাকরিকাল হিসেবে গণনা করে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ২৩ মার্চ ছিল উপাচার্যের শেষ কর্মদিবস। এর আগে গত ১৬ মার্চ তিনি তড়িঘড়ি করে পরিচালক অথবা যুগ্ম পরিচালক পদে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। সেখানে তাঁর মেয়ের জামাইয়েরও যুুগ্ম পরিচালক পদে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি। এ ছাড়া শেষ মুহূর্তে তিনি বোর্ড অব গভর্নর্সের (বিওজি) সভা করে নিয়োগসহ নানা বিষয় অনুমোদন দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হলেও বর্তমানে তিনি ক্যাম্পাসের বাসভবনে অবস্থান করছেন এবং গাড়ি ব্যবহার করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি পেছনের তারিখে এখনো একাধিক ফাইল স্বাক্ষর করছেন। এ ছাড়া উপাচার্য তাঁর শ্যালিকা, একাধিক আত্মীয় এবং তাঁর নিজ এলাকা কুমিল্লার শতাধিক ব্যক্তিকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে গত বুধবার রাতে তাঁকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৫ শিথিল করে পরিবর্তিত নীতিমালা-২০১৭ অনুযায়ী উপাচার্য এম আবদুস সোবহান তাঁর মেয়ে সানজানা সোবহানকে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে এবং জামাতা এ টি এম শাহেদ পারভেজকে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেন। এ ব্যাপারে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগের আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা ছিল সনাতন পদ্ধতিতে এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত চারটি স্তরেই প্রথম শ্রেণি বা গ্রেড পদ্ধতিতে এসএসসি ও এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫০, স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫০। এ ছাড়া স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেধাক্রম প্রথম থেকে সপ্তমের মধ্যে থাকতে হবে। পরিবর্তিত নীতিমালায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৩.২৫-এ নামিয়ে আনা হয় এবং মেধাক্রমে থাকার শর্ত তুলে দেওয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনেই বলা হয়, যোগ্যতা কমানোর একটাই উদ্দেশ্য—২০১৭ সালের আগে যাঁদের আবেদন করার যোগ্যতা ছিল না, তাঁদের নিয়োগের পথ উন্মুক্ত করা। খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় : বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুর রহমান খান তাঁর নিজের ছেলেকে অ্যাডহক ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা কর্মকর্তা বা সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। মেয়েকে নিয়োগ দিয়েছেন শিক্ষক হিসেবে। অধ্যাপক পদে তাঁর স্ত্রীও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেতে আবেদন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেটের পাঁচজন সদস্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন। এরই মধ্যে এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে ইউজিসি। পাঁচ সিন্ডিকেট সদস্যের দেওয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয়, নিয়োগপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যেখানে উপাচার্যের ছেলে মো. শফিউর রহমান খানও রয়েছেন। উপাচার্যের মেয়ে ইসরাত খানকে সম্প্রতি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন উপাচার্য নিজেই। তাঁর মেয়ে ইসরাত খানকে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় যে দুজন শিক্ষককে বাছাই কমিটিতে আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রাখা হয়, তাঁদের একজন উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ। অন্যজন উপাচার্যের মেয়ের স্নাতকোত্তরে সুপারভাইজার ছিলেন। উপাচার্যের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চাকরি করেন। তিনি একটি উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের অধ্যাপক পদে প্রার্থী হয়েছেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৯ ডিসেম্বর এই বিভাগসহ বিভিন্ন নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেছে। এ ব্যাপারে জানতে গত বুধবার রাতে উপাচার্যকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) : যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি গত ১৪ মার্চ ইউজিসিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, উপাচার্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অমান্য করে পিএইচডি ডিগ্রিবিহীন ৩৫ বছরের অধিক বয়সী ফিরোজ কবিরকে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এরপর ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ খুলে এই বিভাগের চেয়ারম্যান পদে ফিরোজ কবিরকে নিয়োগ দিয়েছেন। ফিরোজ কবিরের স্ত্রীকেও এই বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাঁর বয়সও ৩০ বছরের ওপরে। এ ছাড়া মেডিক্যাল অফিসার ও সহকারী স্টোরকিপার পদে অস্বচ্ছভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। উপাচার্য নিজের অনুগত শিক্ষকদের দিয়ে বিভিন্ন কমিটি গঠন করে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেন। উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফিরোজ কবিরকে যথাযথ নিয়ম মেনেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে ৩০ বছরের নিচে কোনো প্রার্থী পাওয়া যায়নি। ফলে রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমার বিরুদ্ধে অন্য যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) : বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়মের ব্যাপারে এখনো তদন্ত করছে ইউজিসি। ২০১৭ সালে ৭৫ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও ২০১৮ সালে বিজ্ঞাপনের চেয়ে ২৬ জন বেশি অর্থাৎ মোট ১০১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, কৃষিতত্ত্ব বিভাগে নিয়োগ বোর্ডে বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপাচার্যের জামাতা এবং বিভাগের অধ্যাপক ড. মির্জা হাসানুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, উপাচার্য তাঁর আপন ভাগ্নে মো. মাহবুব আলমকে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদানের জন্যই জামাতাকে বিশেষজ্ঞের পদে বসান। অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফাইন্যান্স বিভাগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. আনোয়ারুল হক বেগের মেয়ে তাহরিমা হক বেগকে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাহরিমা হক একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন বলে জানা যায়। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) : ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি বিভাগে সাতটি প্রভাষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিকৃবি। এরপর ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি ১৫টি বিভাগে ১৫টি প্রভাষক পদ, চারটি বিভাগে চারটি প্রফেসর পদ ও একটি বিভাগে একটি সহযোগী প্রফেসর পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। দুই বিজ্ঞপ্তিতে ২২টি পদে নিয়োগের কথা থাকলেও ২৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিকৃবি কর্তৃপক্ষ অ্যানাটমি ও হিস্টোলজি বিভাগে একজনের জায়গায় দুইজন, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগে একজনের জায়গায় তিনজন, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মাত্স্য বিজ্ঞান বিভাগে একজনের জায়গায় দুইজন, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগে একজনের জায়গায় তিনজন, অ্যাগ্রিকালচারাল কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে দুইজনের জায়গায় তিনজন, কৃষি বিপণন ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগে একজনের জায়গায় দুইজন, অ্যাকোয়াকালচার বিভাগে একজনের জায়গায় দুইজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ শিক্ষক পদে একাধিক গোল্ড মেডেলিস্ট ও মেধাবী শিক্ষার্থী থাকলেও তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি। গত ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭তম সিন্ডিকেট সভায় এসব নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ : এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার নাসির উদ্দিন নিয়োগে নানা অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি থাকার পরও নানা কৌশলে কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগবিধি অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতায় তৃতীয় বিভাগ বা জিপিএ ২.৫০-এর নিচে গ্রহণযোগ্য নয়। এ জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অধিকতর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম গোলাম হায়দার কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন, যার মধ্যে বিকমে (সম্মান) তৃতীয় শ্রেণি পেয়েছিলেন। অথচ তিনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পেয়েছেন। উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মেকাইল ইসলামের শিক্ষাজীবনেও তৃতীয় শ্রেণি (এইচএসসি) রয়েছে। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। উপরেজিস্ট্রার খান মোহাম্মদ আলী এসএসসি ও স্নাতকে তৃতীয় শ্রেণি পেয়ে পাস করেছেন। এ ছাড়া উপাচার্যের একাধিক আত্মীয়-স্বজনকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।
Link copied!