শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোটিপতি এসআইয়ের স্ত্রী কারাগারে

প্রকাশিত: ০৮:৫৯ এএম, মার্চ ৯, ২০২১

কোটিপতি এসআইয়ের স্ত্রী কারাগারে

ডেইলি খবর ডেস্ক: ২০ বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তির সাথে মাছ চাষের চুক্তি করেছিলেন সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) মো:নওয়াব আলী। চুক্তি করে একটি জলমহাল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। মাছ চাষ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আয়ও করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখালেও বাস্তবে মাছ চাষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তারপরেও শেষ রক্ষা হলো না। দুদকের জালে আটক হয়ে স্ত্রী গুলজার এখন জেলে। ঘটনার বিবরনে জানা যায়-কোটিপতি স্ত্রী গোলজার বেগম দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় মঙ্গলবার ৯ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি আদালতে জামিনের আবেদনও করেন। এই আবেদন নাকচ করে গোলজার বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গোলজার বেগমবিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর স্বামী নওয়াব বর্তমানে ঢাকায় সিআইডির এসআই পদে আছেন। দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, দুনীতির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আসামি গোলজার বেগম। তিনি আদালতে জামিন চান। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। পরে আদালত গোলজার বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, এই মামলায় দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গোলজার বেগম, তাঁর স্বামী এসআই নওয়াব আলীসহ চার আসামির বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্রæয়ারি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। পত্রিকায় এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর আসামি গোলজার বেগম আত্মসমর্পণ করেন। এই মামলায় আগামী ৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে। দুদক সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন নওয়াব আলী। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকার মালিক সাজিয়েছেন স্ত্রী গোলজার বেগমকে। মাছ চাষ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখালেও বাস্তবে মাছ চাষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তারপরও মাছ চাষ করা হয় মর্মে কর কর্মকর্তারা প্রতিবেদন দিয়েছেন। সআই নওয়াব আলী, তাঁর স্ত্রী গোলজার বেগম, কর অঞ্চল-১ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) বাহার উদ্দিন চৌধুরী ও কর পরিদর্শক দীপংকর ঘোষকে আসামি করে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দিয়েছে। এসআই নওয়াব আলী দাবি করেন, তাঁকে হয়রানি করতে দুদক মিথ্যা মামলা করেছে। স্ত্রীর মাছ চাষের আয়ে তাঁর সব অর্জন। দুদক তদন্তে পেয়েছে, নওয়াব আলীর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের কেকানিয়া এলাকায়। সেখানে ২০১৩ সালে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ জমির ওপর একটি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন নিজের নামে। স্ত্রী গোলজারের নামে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার ছলিমপুরে ৩৫৪ শতক জমি, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার এলাকায় পার্কিংসহ ১ হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, একই এলাকায় ৪ শতক জমি রয়েছে। গোলজারের নামে একটি মাইক্রোবাসও রয়েছে। দুদকে জমা দেওয়া হিসাববিবরণীতে গোলজার দাবি করেছেন, তিনি মিরসরাইয়ের পশ্চিম ইছাখালীর মদ্দারহাটে হারেস আহমদ, আমিনুল হক, জাহাঙ্গীর আলম, শওকত আকবরসহ সাতজনের সঙ্গে চুক্তি করে একটি জলমহাল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে, হারেস আহমদসহ যেসব ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি দেখানো হয়েছে, তাঁরা ২০ বছর আগে মারা গেছেন। মরা মানুষের সাথে মাছ চাষ করে কোটি টাকা আয় নিয়ে চট্টগ্রামে চলছে নানা সমালোচনা।
Link copied!