শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছেন পাপন!

প্রকাশিত: ০৯:১৯ এএম, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১

নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছেন পাপন!

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি পদে আর থাকতে চান না- সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার কথাটা বলেছেন নাজমুল হাসান পাপন। কারণ প্রিয় দায়িত্বটাও নাকি তার কাছে ভীষণ চাপ হয়ে উঠেছে এবং তাকে বেশি চাপ নিতে নিষেধ করেছেন চিকিৎসকরা। তাই এবার তিনি চাপ কমাতে চান। হতে চান না বিসিবি সভাপতি। কথাটা নতুন করে মঙ্গলবারও বললেন বিসিবির বর্তমান পর্ষদের শেষ সভার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে। তিনি চান দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির সভাপতি পদে নতুন কেউ আসুক। কিন্তু তার নিজেরই আবার মনে হচ্ছে- তিনি বেঁচে থাকতে এই পদে কেউ আগ্রহী হবে না। বিসিবি সভাপতি হিসেবে নিজেকে আসলে অপ্রতিদ্বন্দ্বীই ভাবছেন পাপন! দিন-ক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে, আরও নির্দিষ্ট করে বললে (জানা গেছে) ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বিসিবি নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বিজয়ীরা গঠন করবেন নতুন পরিচালনা পর্ষদ। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে পুরনোদের বেশিরভাগই থাকবেন এবং অতিনাটকীয় কিছু না ঘটলে তৃতীয় মেয়াদে বিসিবি সভাপতি হতে যাচ্ছেন পাপন। কিন্তু তিনি আর এই পদে থাকতে চান না। সভার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ‘যদি আমি জিতে আসি, তা হলে আমি একজন পরিচালক হয়ে আসব। এরপর আমার প্রথম আবেদন যেটা থাকবে- আমি সভাপতি হতে চাই না। কিন্তু আমি সমর্থন দেওয়ার জন্য আছি। এরপর কী হয়, আমি জানি না।’ শুরুতে কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হন বিসিবি পরিচালকরা। এরপর পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হন সভাপতি। কিন্তু ২০১৩ এবং ২০১৭ সালের নির্বাচনে পাপনের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই ছিল না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। অর্থাৎ শুরু থেকেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী পাপন, এবারও ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিনি নিজেও সেটা মানছেন, ‘আমি যদি এখানে (বিসিবিতে) থাকি, আমার একটা জিনিস মনে হচ্ছে যে- আমি মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এ পদটায় (সভাপতি) কেউ দাঁড়াবে না, এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। বোর্ডে যারাই আসুক, তারা আমাকে চ্যালেঞ্জ জানাক। কেউ বলুক, সভাপতি হতে চাই। কেউ তো বলেও না!’ অন্য কেউ কেন আগ্রহী হন না, এমন প্রশ্নে পাপনের জবাব, ‘জানি না... আমার মনে হয় আমিই সমস্যা।’ ৯ বছর বিসিবি সভাপতির চেয়ার সামলানো সরকারদলীয় এই সাংসদ নাকি মনেপ্রাণেই চান, দায়িত্বে নতুন কেউ আসুক। নতুন কারও দায়িত্বে আসার সুযোগ রাখতেই নাকি এবারের নির্বাচনে কোনো প্যানেল দিচ্ছেন না তিনি, ‘নতুন নতুন আইডিয়া, নতুন মাইন্ডস যদি না আসে ক্রিকেট বোর্ডে, তা হলে নতুন কিছু করার আইডিয়া আসে না। সব একই ধারায় চলতে থাকে। এবার তাই চাচ্ছি, মনেপ্রাণে মনে করি, নতুন লোকের আসা উচিত। সেজন্য এবারই প্রথম আমার কোনো প্যানেল নেই। যে খুশি দাঁড়াতে পারবে। নির্বাচন হবে, যে জিতবে সে আসবে।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘প্রত্যেকবার প্যানেল থাকে। প্যানেল দিলে আর কেউ দাঁড়ায় না। এখন কেউ বলতে পারবে না, সে আমার প্রার্থী। এগুলো কিছু নেই। আমি আশা করব, এবার নির্বাচন হবে।’ বিসিবির গত দুই নির্বাচনে বেশিরভাগ পরিচালকই নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। সভাপতি পদে পাপনও তা-ই। ভবিষ্যতে চোখ রেখে এটাকে ভালো কিছু মনে করছেন না তিনি, ‘এটা ভালো লক্ষণ নয়। কারও জন্য কিছু আটকে থাকে না। আমাদের একটা পাইপলাইন থাকা উচিত, যেখানে নতুন নেতৃত্ব আসবে। নেতৃত্ব দেওয়ার মতো লোক আছে, কিন্তু দুঃখজনক হলো, কেউ আসতে চায় না। প্যানেল দিলে হয় কি, কেউ দাঁড়ায়ই না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হয়ে যাচ্ছে।’ নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা পাপনের ভাষ্য, পরিচালক হতে মুখিয়ে থাকেন সবাই, কিন্তু বোর্ডপ্রধান হতে আগ্রহী নন কেউ, ‘বাংলাদেশে নেতৃত্বের অভাব নেই। কিন্তু কোনো এক কারণে কেউ আসতে চায় না। পরিচালক হতে সবাই চায়। কিন্তু সভাপতি পদের কথা বললে কেউ নাম বলে না। কেন বলে না, আমি জানি না।’ কোনো প্যানেল না দিয়ে এবারের নির্বাচনকে তাই উন্মুক্ত রাখতে চাইছেন পাপন। এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর থাকছেন ১৭১ জন (১৭৪ জন হওয়ার কথা থাকলেও ১৭১টি ফর্ম জমা পড়েছে), যারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে বাছাই করবেন ২৩ পরিচালক। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে আসবেন আরও দুজন। এই ২৫ জনকে নিয়েই বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ।
Link copied!