শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতি পথ দেখাচ্ছে বিশ্বকে

প্রকাশিত: ০২:২০ এএম, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১

প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতি পথ দেখাচ্ছে বিশ্বকে

মানবিক বিশ্ব গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পররাষ্ট্রনীতি এরই মধ্যে বিশ্ব নেতাদের প্রশংসা পেয়েছে। বিভাজন দূর করে সমতা, শান্তি এবং সবার উন্নতি নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে কৌশল তাতে আস্থা পাচ্ছেন বৈশ্বিক নেতারা। জলবায়ু, নারীর ক্ষমতায়ন ও শাসনব্যবস্থায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত, মানবাধিকার, অভিবাসন, অতিমারির এ সময়ে বিশ্বের সবার জন্য কোভিড-১৯-এর টিকা বিনামূল্যে ও সহজে নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার লড়াই, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং আঞ্চলিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কৌশলের কারণেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের উত্থান ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পররাষ্ট্রনীতিকে বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার এবং রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে যা বলেছিলেন তা যদি আমরা ধরি, তবে অনেক অসম্পূর্ণ কাজ যা বঙ্গবন্ধু করে যেতে পারেননি; কিন্তু যেগুলোর কথা বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেছিলেন এবং বলেছিলেন বিশ্বে শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কেন করা প্রয়োজন, সবার উন্নয়নকল্পে যা কিছু গঠনমূলক ভূমিকার জন্য করা প্রয়োজন সেগুলোই প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং এবারে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণেও তা উল্লেখ করেছেন। এজন্য জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষভাবে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।’   মোহাম্মদ জমির আরও বলেন, ‘নারীদের ক্ষমতায়ন এবং শাসন প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, কোভিড ভ্যাকসিন সবার জন্য নিশ্চিত করা, বৈশ্বিক বিভাজন দূর করা, জলবায়ুজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় এবং অভিবাসন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছেন। এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতি বিশ্বের জন্য অনুকরণীয়। শুধু তাই নয়, আঞ্চলিক ইস্যুতেও প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে পথ দেখাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজে একা উন্নতি করলে উন্নয়ন বলা যাবে না, সবার একসঙ্গে উন্নতি ঘটলেই উন্নয়ন বলা যাবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমীন বলেন, ‘জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশের ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ানে একটি কলাম লিখেছিলেন। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন, জলবায়ু সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশের কত অংশ ডুবে আছে। তখন থেকেই আমরা দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলা করাকে অন্যতম ইস্যু হিসেবে দেখতে পাই। এই সঙ্কট শুধু বাংলাদেশেরই নয়, এটি বৈশ্বিক একটি সঙ্কটও বটে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ সঙ্কট কাটাতে বৈশি^ক কৌশল প্রণয়নেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সামনে যেতে হবে এবং একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি বৈশ্বিক ফোরামগুলোতে বাংলাদেশ যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী পররাষ্ট্রনীতিরই ফল। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘসহ একাধিক বৈশ্বিক ফোরামে বলেছেন, আমাদের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করা নয়; বরং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দৃশ্যপটের যে পরিবর্তন হচ্ছে তা মোকাবিলা করাই বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতেও জলবায়ু ইস্যুকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, যা বড় সাফল্য। প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু ইস্যুতে যে নীতি প্রণয়ন করেছেন, যে পরামর্শ দিচ্ছেন, যেভাবে পথ দেখাচ্ছেন তা বিশ্বের জন্য অনুকরণীয়। অনুকরণীয় এ কারণে যে, আমরা বাস্তবতা মাথায় রেখে সেই নীতিকেই সামনে আনছি। আমরা অবাস্তব কিছু তৈরি করছি না।’   ‘আমাদের অনেকেই ছোট রাষ্ট্র বলে থাকে; কিন্তু জনসংখ্যার ভিত্তিতে আমরা যে ছোট রাষ্ট্র নই এবং জনসংখ্যাই যে আমাদের বড় শক্তি তা প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন এবং প্রমাণও করেছেন’ উল্লেখ করে অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমীন বলেন, ‘বাংলাদেশ জন্মের পরই বঙ্গবন্ধু দেখিয়েছিলেন, আমাদের দেশটার জন্ম একটা আদর্শের ভিত্তিতে। সেটা হচ্ছে, বাংলাদেশ বিশ্বের বঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে এবং বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে। সেজন্যই কিন্তু ওই সময় ফিদেল ক্যাস্ট্রো, ইয়াসির আরাফাতের মতো বৈশি^ক নেতাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ স্থাপন হয়। বঞ্চিত মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মানবিকতা এবং শান্তিতে বিশ্বাসের নীতিকে ধরে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর ধারাবাহিকতায় তিনি ২০১৭ সালে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ জনগোষ্ঠীকে দেশে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছেন।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, ‘বাংলাদেশ বাস্তবতাকে সামনে রেখেই তার পররাষ্ট্রনীতি সাজিয়েছে, যে কারণে আজ যে বাংলাদেশের উত্থান ঘটছে তা অনেকেই এমার্জিং পাওয়ার বলছেন। আবার অনেকে এটা মানতে চাচ্ছেন না, বাংলাদেশ কীভাবে এতদূর এলো তা অনেকের ক্ষেত্রেই বুঝতে দুষ্কর হচ্ছে। কিন্তু যে যাই বলুক, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কিন্তু বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং শক্তিশালী হচ্ছে।’
Link copied!