শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীকে হত্যার ১০ দিন পর ছাত্রদল নেতাকে বিয়ে করেন শিপা

প্রকাশিত: ০৮:৪৮ এএম, জুন ১৬, ২০২১

স্বামীকে হত্যার ১০ দিন পর ছাত্রদল নেতাকে বিয়ে করেন শিপা

সাবেক ছাত্রদল নেতা শাহজাহান চৌধুরী মাহির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন আইনজীবী স্বামী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ২ সন্তানের মা শিপা বেগম। তিন মাস আগে মাহির সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে শিপার। এর মধ্যে পরকীয়ায় অন্ধ হয়ে যান তিনি। তাই রাস্তার কাঁটা আইনজীবী স্বামী আনোয়ার হোসেনকে সেহরির সময় নিজেই হত্যা করেন শিপা। আর হত্যার ১০ দিনের মাথায় সাবেক ছাত্রদল নেতা শাহজাহান চৌধুরী মাহিকে বিয়ে করেন তিনি। আর এতে স্বামীকে হত্যার কথা ফাঁস হয়ে যায়। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের (এমএম-২) দ্বিতীয় আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানান শিপা বেগম। রোববার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত টানা সাড়ে ৩ ঘণ্টা শিপার স্বামী হত্যার পরিকল্পনার জবানবন্দি রেকর্ড করেন এমএম-২ এর বিচারক মো. সুমন ভূইয়া। আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, তিন মাস আগে সাবেক ছাত্রদল নেতা শাহজাহান চৌধুরী মাহির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। দুই সন্তানের মায়ায় স্বামীকে ছেড়েও যেতে পারছিলেন না। তাই প্রেমিককে নিয়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শিপা বেগম। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি ২৮ এপ্রিল ঘুমের ওষুধ কিনে আনেন। ২৯ এপ্রিল রাতে আইনজীবী আনোয়ার হোসেনকে সেহরির সময় ১০টি ‘কয়েট-১০০ এমজি’ ঘুমের ট্যাবলেট পানিতে মিশিয়ে খাওয়ানোর পর ডায়াবেটিস থাকায় আর ঘুম থেকে উঠতে পারেননি। এরপর ৩০ এপ্রিল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার আনোয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন। শিপা আদালতে আরও জানান, ওইদিন রাতে প্রেমিক শাহজাহান চৌধুরী মাহিও ছিল শিপার বাসায়। দুজনে মিলে আনোয়ার হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করেন। এরপর মাহিকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না শিপা। এজন্য স্বামী হত্যার ১০ দিনের মাথায় ১০ লাখ টাকা কাবিনে মাহিকে বিয়ে করেন। আইনজীবী আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় ৬ জুন স্ত্রী শিপা বেগমের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে রোববার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বিতীয় আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে শিপার বর্তমান স্বামী প্রেমিক মাহি এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে খুঁজছে পুলিশ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আবু ফরহাদ জানান, পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য আইনজীবীর লাশ উত্তোলনের আবেদন করেছিলাম। আদালত ৬ জুন লাশ উত্তোলনের অনুমতি দেন। আমরা বুধবার লাশ উত্তোলন করব। এক প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, মাহি এ ঘটনা ছাড়াও আরও একটি মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। তাকে গ্রেফতারে আমরা প্রযুক্তিসহ সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি খুব শিগগিরই মাহিও ধরা পরবে। ১ মে শিপার মাধ্যমে আনোয়ারের মৃত্যু সংবাদ পান স্বজনরা। শিপা তাদের জানিয়েছিলেন ৩০ এপ্রিল সেহরি খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েন আনোয়ার। পরদিন দুপুরে বিছানায় মৃত অবস্থায় স্বামীকে দেখতে পান তিনি। সেসময় স্বজনরা স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে ওই রাতেই তার দাফন করেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই শিপা দ্বিতীয় বিয়ে করলে তাদের সন্দেহ হয়। এর জের ধরে আনোয়ারের ভাই মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২ জুন সিলেটের আদালতে মামলা করেন।
Link copied!