রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

পপুলার লাইফ পর্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৪, ০৯:০৬ পিএম

পপুলার লাইফ পর্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখছে বিএসইসি

 

দেশের শেয়ারবাজারে বীমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে হাসান আহমেদকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) এ অভিযোগ জানিয়েছেন খোদ হাসান আহমেদ। তবে, তার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএসইসি । একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দালিলিক নথিপত্র বিএসইসিতে দাখিল করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হাসান আহমেদ পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে আছেন। এর আগে তিনি কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। সম্প্রতি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন হাসান আহমেদ।
তবে, পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ রয়েছেন হাসান আহমেদ। অসুস্থতার কারণে কোম্পানিটির দাপ্তরিক কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছিলেন না তিনি। তাই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভা করে নতুন চেয়ারম্যান নির্ধারণ করেছেন। তবে হাসান আহমেদকে চেয়ারম্যানের পরিবর্তে পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক হিসেবে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পর্ষদ। এই সিদ্ধান্তে অসম্মতি জানিয়েছেন বর্তমানে উদ্যোক্তা পরিচালক হাসান আহমেদ। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেছেন। তবে, তার দায়ের করা রিট উচ্চ আদালতে টেকেনি। তাই, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে বিতর্কিত করতে তিনি বিএসইসিতে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন।
চলতি বছরের গত ৩ মে বিএসইসির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন হাসান আহমেদ। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ধারা ১১(২) অনুযায়ী কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে বিষয়টির সার্বিক ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে বিএসইসি।
সাবেক চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন,‘চেয়ারম্যান পদে আমি থাকা সত্বেও, কোনো প্রকার নোটিশ ও ভার্চুয়াল লিঙ্ক না দিয়ে কোম্পানিটি পরিচালনা পর্ষদ সভা করেছে। ওই পর্ষদ সভায় কোনো নিয়মনীতি অনুসরণ না করে আমাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আমার হাতে থাকা শেয়ার থেকে স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে কিছু শেয়ার হস্তান্তরের জন্য কোম্পানির কাছে আবেদন করা হলেও সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।’
অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘বর্তমানে আমি উদ্যোক্তা পরিচালক ও পরিচালক হওয়া সত্বেও, আমাকে পরিচালনা পর্ষদ সভার কোনো এজেন্ডা বা ভার্চুয়াল লিঙ্ক দেয়া হয় না। এমনকি পরিচালনা পর্ষদ সভার কার্যপত্রও সরবরাহ করা হয় না।’এ বিষয়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বি এম ইউসুফ আলী বলেন, ‍‍`উনার অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন নিয়মিত পর্ষদ সভার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে যথাযথ প্রমাণ রয়েছে। উনি অসুস্থ থাকার কারণে পরিচালনা পর্ষদ নতুন চেয়ারম্যান নির্ধারণ করেছে। তবে পরিচালনা পর্ষদ আশ্বস্থ করেছে, তিনি সুস্থ হলে পুনরায় তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন করা হবে। কিন্তু তিনি বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না। সেজন্যই বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছেন। তবে এখনো পর্যন্ত বিএসইসি থেকে পাঠানো চিঠি আমরা হাতে পাইনি। চিঠি হাতে পেলে সে অনুযায়ী বিএসসিকে যথাযথ প্রমাণসহ জবাব দেয়া হবে।’
এদিকে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কোম্পানি সচিব মোস্তফা হেলাল কবির বলেন, ‍‍`উদ্যোক্তা পরিচালক হাসান আহমেদের শেয়ার হস্তান্তরের বিষয় আমরা একটি চিঠি পেয়েছি। তিনি অসুস্থ থাকাকালীন স্ক্যান করা স্বাক্ষর দিয়ে একটি চিঠি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। উনার শেয়ারগুলোর আনুমানিক মূল্য ২৪ কোটি টাকা। তাই উনাকে সশরীরে এসে চিঠিতে স্বাক্ষর দিয়ে আবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তবে তিনি তা করেননি। তাই আবেদনটি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।এ বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান হাসান আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযোগ রয়েছে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির নানা অনিয়ম-দুর্নীতি মতলববাজরা ধামা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!