দেশে এবার প্রবাসী আয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি অর্থ বছরের ৭ মে পর্যন্ত এসেছে ২৫.২৭ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড।বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সুত্র এ তথ্য জানায়।
স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকেরা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের জন্য যেতে শুরু করেন। তখন থেকে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো আরম্ভ করেন। এই প্রবাসী আয় অর্থনীতির একটি প্রধান খাত হিসেবে জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।বাংলাদেশ ব্যাংক সুত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরের ৭ মে পর্যন্ত এসেছে ২৫ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বো”চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড। এর আগে দেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেবে, জুলাই ২০২৩ থেকে ৭ মে ২০২৪ পর্যন্ত এসেছিল ১৯ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। আর ৭ মে ২০২৫ এ প্রবাসী আয় এসেছে ১১০ মিলিয়ন ডলার। এ মাসের প্রথম সাত দিনে এসেছে ৭৩৫ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। সে সময়ে এসেছিল ৬০১ মিলিয়ন ডলার।
মাসের হিসাবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল মার্চে। সেবার দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল রেকর্ড ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। ঈদের পর এপ্রিলে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। মাসের হিসাবে যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বো”চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। এরপর শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে—সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য (ইউকে),মালয়েশিয়া,কুয়েত,ইতালি,ওমান,সিঙ্গাপুর ও কাতার। বিদায়ী এপ্রিলে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় সর্বো”চ ৩৭ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। তবে গত জানুয়ারি, ফেব্র“য়ারি ও মার্চ এই তিন মাসে প্রবাসী আয় পাঠানোয় শীর্ষে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এপ্রিলে দেশটি থেকে ৩৩ কোটি সাত লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে নেমে গেছে তিনে। এ ছাড়া আলোচিত সময়ে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার থেকে যথাক্রমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার, ২১ কোটি ৯ লাখ ডলার, ১৬ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার, ১৫ কোটি পাঁচ লাখ ৯০ হাজার ডলার, ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার, ১১ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার ও ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
এ ছাড়া বাহরাইন থেকে এসেছে ছয় কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার, ফ্রান্স থেকে তিন কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার, সাউথ আফ্রিকা থেকে দুই কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার, সাউথ কোরিয়া থেকে দুই কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার, কানাডা থেকে দুই কোটি ৩৭ লাখ ডলার, জার্মানি থেকে এক কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার ডলার, অস্ট্রেলিয়া থেকে এক কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার, গ্রিস থেকে এক কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার ডলার, জর্ডান থেকে এক কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার, মালদ্বীপ থেকে এক কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। স্পেন থেকে এক কোটি ২৫ লাখ ডলার, মরিশাস থেকে এক কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার, ব্র“নাই দার“সসালাম থেকে ৮৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার, জাপান থেকে ৮৫ লাখ ২০ হাজার ডলার, পর্তুগাল থেকে ৭৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার, ইরাক থেকে ৭৩ লাখ ডলার, লেবানন ৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পোল্যান্ড ৫৯ লাখ ২০ হাজার ডলার, সুইডেন থেকে ৫৫ লাখ ডলার এবং ফিনল্যান্ড থেকে ৩৮ লাখ ১০ হাজার ডলার এসেছে। অন্যান্য দেশ মিলে প্রবাসী আয় এসেছে চার কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
আপনার মতামত লিখুন :