নির্বাচন কমিশনের অনেক ক্ষমতা আছে কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত আগে তারা ক্ষমতা ব্যবহার করেনি বলে অভিযোগ করেছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনে যারা অপরাধ করেছেন তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আসতে হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেকগুলো অপরাধ হয়েছে। এই অপরাধের বিচার হওয়া দরকার। সেটাও আমরা আলোচনা করেছি। যাদের অপরাধ প্রমাণ হবে তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আসতে হবে।
বিগত তিন কমিশনকে বিচারের আওতায় আনবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারাই অপরাধ করেছে সবাইকে বিচারের আসতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী- ৭৩ থেকে ৯০ ধারার মধ্যে নির্বাচনের অপরাধের বিষয়গুলো বর্ণনা আছে। এগুলো যাতে যথাযথ প্রয়োগ হয় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর আগের কমিশন যুক্তি দিত ফলাফল হওয়ার পর কমিশনের আর অপরাধের শাস্তি দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না এমন বিষয় সামনে আনলে তিনি বলেন, তারা ইচ্ছে করলেই করতে পারতেন। গেজেট হাওয়ার আগে তদন্ত সাপেক্ষে (আদালতের সুস্পষ্ট রায় আছে) তারা নির্বাচন বাতিল করতে পারতেন। নির্বাচন শুধু বাতিল নয় তদন্ত সাপেক্ষে পুনঃনির্বাচন দেওয়ার ক্ষমতা তাদের আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত ক্ষমতা তারা ব্যবহার করেননি।বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নতুন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য বদ্ধ পরিকর। আমরাও আমাদের অবস্থান থেকে সুচারুভাবে সম্পূর্ণভাবে শেষ করতে পারে ও সফল হয় সংস্কার প্রস্তাব দেব যেগুলো তারা কিছু বাস্তবায়ন করবে আবার কিছু সরকার বাস্তবায়ন করবে। আর কিছু সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বাস্তবায়ন করবে।
সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, একটা নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। নির্বাচন কমিশন ও তাদের দায় দায়িত্ব ক্ষমতা স্বাধীনতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মনোনয়ন পত্র চূড়ান্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত কার হওয়ার উচিত। আদালতের কি ভূমিকা থাকবে। হলফনামা, না ভোট, সীমানা পূর্নর্নির্ধারণ, পোস্টাল ব্যালট, প্রবাসী ব্যালট, ভোটার তালিকা, নির্বাচনি অপরাধ, এনআইডিসহ নির্বাচনের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি, কিছু বিষয় চিহ্নিত করেছি এগুলো নিয়ে আমরা আলাপ আলোচনা করছি। আমাদের এখনো এক মাস সময় আছে। আশাকরি একমাসের মধ্য আমাদের সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে দেব। ওনাদের (ইসি) কিছু মতামত চেয়েছি ওনারা কিছু শেয়ার করতে চাইলে শেয়ার করবেন।
নির্বাচন কমিশন তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারতো না এই বিষয়ে কোনো পরামর্শ দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু নিরেপক্ষ নির্বাচনের খাতিরে দিনকে রাত, রাতকে দিন করা ছাড়া সবই করতে পারে। নির্বাচন কমিশনের অগাধ ক্ষমতা আছে।
নতুন কমিশনের পক্ষ থেকে আপনাদের কোনো মতামত দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়নি। আমাদের মতবিনিময়ের মাধ্যমে অনেক কিছু ওঠে এসেছে। মনে হলো আমাদের কোনে মতপার্থক্যে নেই। ওনারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। আমরা সহায়তা করতে একপায়ে রাজি আছি। আমাদের সবার লক্ষ্য একটাই।এ আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দীনসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার ও সংস্কার কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :