বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সবজির দাম কমছে না, বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ১২:০৮ পিএম

সবজির দাম কমছে না, বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে আবারও কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার মতো। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় অর্ধেকে নেমেছে কাঁচামরিচের দাম। স্থিতিশীল রয়েছে ডিম, মুরগিসহ অন্য নিত্যপণ্যের দর। 
রাজধানীর একাধিক বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি করা হবে না এমন খবরে দর বেড়েছে। মজুতদার ও কৃষক পর্যায়ে দর বাড়ার কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে সবজি ব্যবসায়ীরা জানান,উৎপাদন এলাকায় এখনও শীতের সবজির দর চড়া। এ কারণে দর কমছে না পাইকারি ও খুচরা বাজারে।গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও,মহাখালী ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 
মাসখানেক আগে হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের বাজার। চার-পাঁচ দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকার মতো বেড়ে যায় দাম। প্রতি কেজির দর ওঠে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। এরপর সরকার আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে দর কিছুটা কমতে থাকে। ধীর ধীরে কমে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় নেমে আসে। 
গত সপ্তাহে সরকারের তরফে বলা হয়,পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত আছে। নতুন পেঁয়াজও শিগগিরই বাজারে চলে আসবে। তাই কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় আমদানির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। সরকারের এমন পদক্ষেপের সুযোগ নিচ্ছেন মজুতদার ব্যবসায়ীরা। ফলে ফের দাম বাড়ছে। গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। তবে টিসিবির হিসাবে, গত বছরের চেয়ে এখনও ১০ শতাংশ কম দর রয়েছে পেঁয়াজের। এদিকে বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ না এলেও পাতাযুক্ত পেঁয়াজ এসেছে। প্রতি কেজি কেনা যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, সরকার পেঁয়াজ আমদানি করবে না। এ জন্য মজুতদাররা আবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। 
বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও সে তুলনায় দাম কমেনি। দু-তিনটি ছাড়া বেশির ভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগে দর ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গত সপ্তাহের মতো বরবটি, বেগুন ও উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে ঢ্যাঁড়শ ও পটোলের কেজি ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় ফুল ও বাঁধাকপির দর ১০ টাকা কমেছে। মাঝারি আকারের প্রতি পিস ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। 
কাঁচামরিচের দাম আরও কমেছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে মরিচের কেজি ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। দাম অনেকটা কমে গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে গতকাল  প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। 
বাজারে নতুন আলু এলেও দাম চড়া। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। গত সপ্তাহে কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। একই সঙ্গে পুরোনো আলুর দর বেড়েছে কেজিতে দুই থেকে চার টাকার মতো। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ২৮ টাকায়।
খিলগাওয়ের তেজকুনিপাড়া এলাকার একাধিক সবজি ব্যবসায়ী বলেন,কারওয়ান বাজার ও মিরপুর-১ নম্বরে পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেশি। এ জন্য খুচরায় দাম বাড়ছে। পাইকারিতে দাম বেশি কেন জানতে চাইল কারওয়ান বাজারের  একাধিক আড়তদার বলেন, যেসব এলাকায় সবজি উৎপাদন হয়, সেখানে এখনও দর বেশি। কৃষক নতুন সবজির ভালো দাম পাচ্ছেন। এ জন্য ঢাকায় দাম বাড়ছে।
সবজির বাজার চড়া হলেও গত সপ্তাহের মতোই ডিম ও মুরগির বাজারে কিছুটা স্বস্তির খবর আছে। ফার্মের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। যদিও পাড়া-মহল্লায় ১২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। মুরগির বাজারও গত সপ্তাহের মতো স্থির রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৭০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছ-মাংসসহ অন্য নিত্যপণ্যের বাজার আগের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে বলা হলেও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রাজধানীর একেক বাজারের দামের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছে।ছবি:সংগৃহীত
 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!