আজকের (শুক্রবার) ভূমিকম্প হঠাৎ করেই ঝুঁকি জানান দিয়েছে, বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে আমরা অনেক আগে থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। গত ৩৪ বছরই বলা হচ্ছে, একটা ভয়ংকর ভূমিকম্প অত্যাসন্ন।কারণ বাংলাদেশের অবস্থান ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা এই তিন টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে। বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে টেকটোনিকে বড় ফল্ট আছে। সিলেটের ডাওকিতে যে ফল্ট আছে, সেটি সিলেট হয়ে পার্বত চট্টগ্রামের দিকে চলে গেছে। ভূমিকম্প প্রতিনিয়ত আমাদের তা জানান দিচ্ছিল। তবে এবারই বেশ জোরেশোরে আমরা ভূমিকম্প অনুভব করলাম। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, আমরা সেই বিপদ থেকে উত্তরণের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি।
আমরা প্রথম পরিকল্পিত নগরায়ণের নকশা তৈরি করতে পেরেছি ২০১০ সালে। এটি তৈরির সময় সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ঢাকা শহর ঝুঁকিতে আছে।এই যে এত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, সেই ভবনগুলোর ৯৪ শতাংশ কোনো না কোনোভাবে অবৈধ ও অনুমোদনহীন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এই সমীক্ষার পরও কোনো উদ্যোগ নেয়নি। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত ডকুমেন্টে সুস্পষ্টভাবে বলা ছিল, একটি নীতিমালা তৈরি করে সমীক্ষার মাধ্যমে প্রত্যেকটা ভবনকে নিরাপদ করার উদ্যোগ যেন নেওয়া হয়। কিন্তু এটা বাস্তবায়ন হয়নি।
একটি নীতিমালার মধ্য দিয়ে প্রত্যেকটি ভবন পরীক্ষা করে সেগুলো নিরাপদ করার একটি সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় সেটি বাস্তবায়ন করছে না। সেই নীতিমালা পেশাজীবী সংগঠনগুলো নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে পরিশ্রম করে স্বপ্রণোদিতভাবে বানিয়ে দিয়েছে। তা সত্বেও সরকার রাজনৈতিক কারণে এটি বাস্তবায়নে বিমুখ।
আমরা সারা দেশে অনুমোদনপূর্ণ ভবন বানানোর জন্য যে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি (বিবিআরএ),বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এসব আজ পর্যন্ত তৈরি করতে পারিনি। এক্ষুনি নবায়নযোগ্য সার্টিফিকেশনের প্রবর্তন করে প্রত্যেকটি ভবনের সুরক্ষা নিশ্চিতের উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থাৎ পরিষ্কার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেকটি ভবন পরীক্ষা করে তার সুরক্ষা নিশ্চিত করার নীতিমালার বাস্তবায়ন করা হোক। ইকবাল হাবিব, নগর পরিকল্পনাবিদ

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :