বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান পরিবর্তন করার অধিকার কারও নেই। শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা, সুষ্ঠু ও গ্রাহণযোগ্য নির্বাচনে গণতান্ত্রিক উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)।
জুলাই সনদ ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) বিষয়ে চলমান বির্তক নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘রাষ্ট্র কোনো ছেলেখেলা নয়। ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা ছিনিমিনি খেলতে পারি না।’
সালাহউদ্দিন বলেন,‘এই রাষ্ট্রকে একটা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চলতে দিতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের অভিসন্ধির কাছে আমরা কোনো দিন মাথা নত করতে পারি না। জনগণই হচ্ছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার মালিক। আসুন আমরা তাদের কাছে যাই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেকোনো একটা আইনানুগ বৈধ এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধানকে পরিবর্তন করার কোনো অধিকার আমাদের কারও নেই। তাহলে এমন একটি পরিস্থিতির নজির সৃষ্টি হবে, যে নজিরটা আগামী দুই বছর পরে, পাঁচ বছর পরে বারবার কোনো না কোনো দাবির মুখে পড়বে যে এইভাবে এই প্রক্রিয়ায় আবার সংবিধান পরিবর্তন করেন।’
জুলাই সনদ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বলেছি নির্বাচনের দিনে একই দিনে আরেকটা ব্যালটের মাধ্যমে গণভোটের সেই রায়টা নেওয়া যাবে যে এই সংস্কারের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের কাছে আমরা যারা প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হয়েছি, সকল রাজনৈতিক দল সেই প্রতিশ্রæতির পক্ষে জনগণ আছে কি না, সেই সনদের পক্ষে জনগণ আছে কি না হ্যাঁ অথবা না বলুন। যদি জনগণ হ্যাঁ বলে, তাহলে সেই পার্লামেন্ট সেই নির্বাচিত সংসদেও প্রত্যেকটা সংসদ সদস্য আইনানুগভাবে ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত হবেন, এই সনদ বাস্তবায়নের জন্য। আমরা সেই প্রক্রিয়ার কথা বলেছি। কিন্তু না, তাদের কথাই মানতে হবে যে সাংবিধানিক আদেশের মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে এই ঘোষণা নাকি এখনই জারি করতে হবে, উইথ ইমিডিয়েট এফেক্ট যে আজকে থেকে কার্যকর হলো ধরে নিয়ে।’বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধান তো কোনো কচুপাতার পানি নয় যে যা খুশি, যেভাবে খুশি সেভাবে আমরা বলে দিলেই পরিবর্তন হবে।’
এ সময় পিআরের দাবি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা আজকে পিআর-পিআর করছে তাদের উদ্দেশে শুধু বলি, যে কয়টা রাজনৈতিক দল নিয়ে আপনারা মাঠে এ সমস্ত বক্তব্য দিচ্ছেন তারা কারা? তাদের ’২৪ (২০২৪) সালের ৭ জানুয়ারিতে কী ভূমিকা ছিল? আমরা জানি, আপনাদের অন্তর্ভুক্ত একটি রাজনৈতিক দল নাম নেব না... আপনারা নাম খুঁজে বের করবেন... তারা ৭ জানুয়ারির ‘‘আমি-ডামি’’ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে,তারা আপনাদের দোসর হয় কীভাবে আন্দোলনে?’ ’
আন্দোলনরত দলগুলোর উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি,জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য আপনাদের কোনো আন্দোলন করা সঠিক হবে না বাংলাদেশের এই গণতান্ত্রিক আবহের মধ্যে। আমরা চাই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য অটুট থাকুক, আমাদের সবার চাওয়া উচিত ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে আমরা সমুন্নত রেখে এটাকে শক্তিতে পরিণত করে চিরতরের জন্য ফ্যাসিবাদী শক্তিকে আমরা নির্বাসনে দিই।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘যে সমস্ত রাজনৈতিক দল নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে; দেশের স্বার্থকে, জনগণের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। তাদের বলব, আপনারা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে সঠিক রাস্তায় ফেরত আসুন। জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। এনডিপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল হারুনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :