মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

ব্যাংকের ঋণ জালিয়াত নাফিজসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম

ব্যাংকের ঋণ জালিয়াত নাফিজসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও আব্দুল মোনেম লিমিটেডের দুই মালিকের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতি ও আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।রোববার (১৩ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রাকিব উদ্দিন মিনহাজ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
মামলায় মোট চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, ব্যাংকের এসইভিপি সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.এস.এম মঈনউদ্দীন মোনেম এবং মিসেস ফারহানা মোনেম।
দুদকের অভিযোগ,গুলশান কর্পোরেট শাখা থেকে ৫ কোটি টাকার ৬ মাস মেয়াদি ঋণ নেওয়ার পর আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই অর্থ ব্যবসায় ব্যবহার না করে অন্য ঋণ পরিশোধে ব্যয় করেন। পরে সেই টাকা আত্মসাতের চেষ্টাও করা হয়। এতে তারা দন্ডবিধির ৪০৯, ১০৯, ৪২০ ও ৫১১ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
দুদকের তদন্তে আরও উঠে এসেছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে শুধু এই একটি নয় ব্যাংক দখল, স্বজনপ্রীতি, ঘুষ গ্রহণ, অর্থপাচার ও ঋণ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের বহু অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালে পদ্মা ব্যাংকের (তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংক) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি ধারাবাহিকভাবে প্রতারণা ও আর্থিক জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়েন।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি কানাডায় বাড়ি কেনা থেকে শুরু করে একাধিক ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য ব্যাংক ও বিভিন্ন খাত থেকে আত্মসাৎ করা অর্থ পাচার করেন। যদিও ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারি তিনি ব্যক্তিগত ও স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদ্মা ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করেন।
দুদকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে,নাফিজ সরাফাতের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকা সওে¦ও গ্রাম বাংলা ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে ৪০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে জেসিকা ইন্টারন্যাশনালের নামে ৬০ কোটি টাকার ঋণও আত্মসাৎ করা হয়। এছাড়া পদ্মা সিকিউরিটিজের মাধ্যমে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয় তার নিজের প্রতিষ্ঠানে।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, ফ্লোরা সফটওয়্যার লিমিটেড থেকে ঘুষ নিয়ে ব্যাংকের জন্য সফটওয়্যার কেনা হয়, যার বিনিময়ে তিনি ৮ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। এসব কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পদ্মা ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে, যা ব্যাংকটিকে দ্বিতীয়বারের মতো বড় আর্থিক সংকটে ফেলে।নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে এমনকি সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান হওয়ার চেষ্টা এবং নিজের স্ত্রী ও ঘনিষ্ঠদের পরিচালক পদে বসানোর অভিযোগও দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।দুদক সূত্র জানায়, এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নাফিজ সরাফাত ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!