বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপির প্রধান লক্ষ্য হবে ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি’ গড়ে তোলা, যা লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বার্তায় তিনি এই লক্ষ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এমন একটি আধুনিক ও গণমুখী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বিএনপির, যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারীরা, গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এবং কোনো নারীকে তার পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে না।
তারেক রহমান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য তুলে ধরে বলেন, পুরুষদের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম; যেখানে পুরুষদের ৮০ শতাংশ কর্মজীবী, সেখানে নারীদের সংখ্যা মাত্র ৪৩ শতাংশ। তিনি এই বৈষম্যকে দেশের অগ্রগতিতে বড় বাধা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
এই সমস্যা সমাধানে, বিএনপি সারা দেশে শিশু পরিচর্যা বা ‘চাইল্ড কেয়ার’-কে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কৌশলের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ বিবেচনা করছে। তারেক রহমানের প্রস্তাব অনুযায়ী, বিএনপির পরিকল্পনায় রয়েছে: সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, সরকারি অফিসগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ, বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা, শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা রাখা নিয়োগকর্তাদের জন্য কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান এবং নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান।
তারেক রহমান বলেন,‘এই একটি সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে,পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে,ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা দিতে পারে এবং আমাদের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করতে পারে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।
ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর গবেষণা উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই খরচ পুনরুদ্ধার করতে পারে।’
তারেক রহমানের ভাষায়, ‘শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়; এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ।’ তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নই ‘বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি’ এবং ‘আমরা এমন যে কোনো পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায্য নয়, এটিই বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি।ছবি-সংগৃহীত

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :