গাজা উপত্যকায় গত দুই বছরে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বোমা ও গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ডের চার ভাগের তিন ভাগ ভবন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি এই ধ্বংসযজ্ঞে ৬ কোটি ১০ লাখেরও বেশি জঞ্জালের নিচে চাপা পড়েছে সাগরতীরের এই উপত্যকাটি। জাতিসংঘের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে গত ১০ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসলায়েলের মধ্যে চালু হওয়া ‘ভঙ্গুর’ যুদ্ধবিরতির কারণে এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখন্ডের পুনর্গঠনের পথ তৈরি হয়েছে। আর এই কাজ করতে গেলে এখন বিশাল এই জঞ্জাল ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এগোতে হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে যে সংঘাতের সূচনা হয়, সেই সময় থেকে এ বছরের ৮ জুলাই পর্যন্ত স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের ইউনোস্যাট কর্মসূচি থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ এই ভূখন্ডে এক লাখ ৯৩ হাজার ভবন বা দালানকোঠা ক্ষতিগ্রস্থ,ধ্বংস করেছে। এই সংখ্যা সেখানকার মোট ভবনগুলোর ৭৮ শতাংশ। তবে জাতিসংঘের এজেন্সিটির সেপ্টেম্বর ২২ থেকে ২৩ তারিখের ছবি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই অনুপাত আরও বেশি, প্রায় ৮৩ শতাংশ।
এই ধ্বংসযজ্ঞে সৃষ্টি হয়েছে ছয় কোটি ১৫ লাখ টন জঞ্জাল, যা ওজনে নিউইয়র্কের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের চাইতে ১৭০ গুণ বেশি। হিসাব করলে দেখা যাবে, গাজার ছোট ভূখন্ডের প্রতি বর্গমিটারে ১৬৯ কিলোগ্রাম জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি-ইউএনইপির তথ্য অনুসারে, তিনভাগের দুইভাগ জঞ্জাল তৈরি হয়েছে প্রথম পাঁচ মাসের যুদ্ধে।
ইউএনইপির একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আবর্জনা গাজার অধিবাসীদের ওপর মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করেছে। জাতিসংঘের এই সংস্থাটি বলছে, বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরের কাছাকাছি এলাকাগুলোতে দালানকোঠার জঞ্জাল থেকে আগুনে পোড়ে না এমন ৪৯ লাখ টন বিষাক্ত আবর্জনা তৈরি হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২৯ লাখ টন আবর্জনা শিল্পকারখানার বর্জ্যের সঙ্গে মিশে আরও বিষাক্ত হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় গত দুবছরের যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ৬৮ হাজার ২৮৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। হামাস পরিচালিত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য দিয়েছে, যাকে বিশ্বাসযোগ্য বলেছে জাতিসংঘ। ছবি : এএফপি

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :