মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে কখনই নত না হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কোকে লক্ষ্য করে ওয়াশিংটনের নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন তিনি। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় অর্থনৈতিকভাবে কিছু ক্ষতি হতে পারে, তবে তাদের চাপে কখনই রাশিয়ার মাথা নত হবে না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি ওয়াশিংটন রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি-রসনেফট ও লুকোইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রায় তিন ডজন সহযোগী প্রতিষ্ঠানকেও একই তালিকায় যুক্ত করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ক্রেমলিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ার তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেএবং রাশিয়া-সম্পর্কিত কারণে দুটি চীনা তেল শোধনাগারকেও তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করেছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক তেলের দাম প্রায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে এতে রাশিয়ার রাজস্বে বড় ধাক্কা খাবে পুতিন।
বৃহস্পতিবার রুশ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পুতিন বলেন, এটি রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টির এক অমিত্রসুলভ পদক্ষেপ, যা রাশিয়া-আমেরিকা সম্পর্ককে আরও দুর্বল করবে। তিনি আরও বলেন, কোনো মর্যাদাবান দেশ কখনো চাপের মুখে সিদ্ধান্ত নেয় না। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ওপর বড় প্রভাব না ফেললেও কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
পুতিন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তাদের ভাবা উচিত, তারা আসলে কার স্বার্থে কাজ করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম আরও বাড়বে। একইসঙ্গে পুতিন হুঁশিয়ারি দেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালায়, তবে তার জবাব হবে খুব শক্তিশালী।
নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে বিদেশি দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়ার প্রধান তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না এবং তারা আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার অনেকাংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে রাশিয়ার প্রধান দুই জ্বালানি ক্রেতা চীন ও ভারত তাদের তেল আমদানি সাময়িকভাবে স্থগিত করছে। ভারতের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে পুনর্বিবেচনা চলছে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলোরও একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা আশঙ্কা করছে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। রাশিয়ার অর্থনীতির প্রায় পাঁচভাগের একভাগই তেল ও গ্যাস খাতনির্ভর। ফলে এই খাতের রপ্তানি হ্রাস ক্রেমলিনের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :