বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শরণখোলা থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম

শরণখোলা থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি

শরণখোলা বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের শরণখোলায় হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের মার্কেটিং রিপ্রেজেনটেটিভ সুদিপ্ত বিশ্বাস (৩০) প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন। গত এক মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন ওষুধ ব্যবসায়ী, চিকিৎসক ও কোম্পানি প্রতিনিধিদের কাছ থেকে ধার ও মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা সংগ্রহের পর গত রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকালে কাউকে না জানিয়ে শরণখোলা থেকে পালিয়ে যান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুদিপ্ত বিশ্বাস মাগুরা সদর উপজেলার গাংনালিয়া ইউনিয়নের মালন্দ গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম দ্বিদল বিশ্বাস। তিনি গত ৪ বছর ধরে শরণখোলায় হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এলাকায় দীর্ঘদিন কাজ করায় ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুযোগেই তিনি ধার ও মুনাফার লোভ দেখিয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
টাকা ধার দেওয়া ভুক্তভোগী রায়েন্দা হাসপাতাল রোডের নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার শুভেন্দু বিশ্বাস অভি বলেন, “সুদিপ্ত গত শুক্রবার আমার কাছে ২৫ হাজার টাকা চান। তখন আমি ১৫ হাজার টাকা নগদ দেই ও ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাই। দু’দিন পর শুনি সে পালিয়ে গেছে।”
একইভাবে শরণখোলায় শরীফ ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিনিধি উজ্জ্বল বিশ্বাস জানান, প্রায় ১০ দিন ধরে ঘুরে গত ১১ নভেম্বর সকালে সুদিপ্ত তার কাছে ৫০ হাজার টাকা ধার নেন। পরে জানতে পারেন তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
কোম্পানির দেনার কথা বলে হাসপাতাল গেটের জিহাদ ফার্মেসীর মালিক ইব্রাহিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার, মা ফার্মেসীর রফিকের কাছ থেকে ২৫ হাজার, রাজাপুর সততা ফার্মেসীর হায়দার আলীর কাছ থেকে দেড় লাখ, লোকমান ফার্মেসীর রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে ২৩ হাজার, স্কয়ার কোম্পানির প্রতিনিধি ইব্রাহিমের কাছ থেকে ১০ হাজার, জান্নাতি ফার্মেসীর ওহিদুজ্জামানের কাছ থেকে ১০ হাজার এবং একমি কোম্পানির স্বাধন বাবুর কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে শরণখোলার প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোট প্রায় ১০ লাখ টাকা সংগ্রহের পর তিনি পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে শরণখোলা উপজেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওলিউর রহমান রিপন বলেন, “এই এলাকায় এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। সুদিপ্ত অনেক ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকার বেশি নিয়ে পালিয়েছে। সবাই লাভ পাওয়ার আশায় টাকা দিয়েছেন। এখন সবাই চিন্তায় আছেন।” তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে থানায় বিষয়টি জানানো হবে এবং টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি এ ধরনের প্রতারণা থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের বাগেরহাট জেলার এরিয়া ম্যানেজার আরিফুজ্জামান খান বলেন, “সুদিপ্ত প্রায় ৪ বছর ধরে চাকরি করছেন। গত রবিবার কাউকে না বলে কর্মস্থল থেকে পালিয়েছে। কোম্পানি কখনো কারো কাছ থেকে টাকা ধার নেয় না। সে ব্যক্তিগত লাভ দেখিয়ে টাকা নিয়েছে, তাই এর দায় কোম্পানি নেবে না।” তিনি জানান, পর্যায়ক্রমে তার বাড়ি ট্রেস করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে সুদিপ্ত বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
শরণখোলা থানার ওসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, “এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!